ষ্টাফ রিপোর্টার:
ডাকাতি করতে এসে ডাকাতদের চিনতে পারায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা খুনের মূল হোতা সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিকুলকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রংপুর জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দীর্ঘ ৭ মাস পর গত ৩ জুলাই নিজ বাড়ি থেকে সিদ্দিকুরকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। আসামি সিদ্দিকুল পীরগঞ্জ থানার চতরা পাড়ার দুলা মিয়ার ছেলে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিলকিস আরা বেগম ও তার স্বামী নিজ বাড়িতে একা থাকতেন। আসামি সিদ্দিকুর রহমান ইতিপূর্বে দুইবার বাড়িটিতে চুরি করে। একবার ধরা পড়ায় ৪ মাস জেলও খাটে। সেই ক্ষোভ থেকে খুনের ৩ দিন আগে সেসহ আরো চারজন মিলে পুনরায় বিলকিস আরা বেগমের বাড়িতে চুরি করার পরিকল্পনা করে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামি সিদ্দিকুরসহ আরো চারজন গত বছরের ২০ ডিসেম্বর রাতে বিলকিস আরার বাড়িতে প্রবেশ করে। এসময় তারা বিভিন্ন রুমে থাকা আসবাব পত্রসহ প্রায় তিন ভরি স্বর্নালংকার ও নগদ প্রায় ২ লাখ টাকা নিয়ে যায়। ডাকাতির সময় বিলকিস আরা তাদেরকে চিনতে পারলে তাকে শ্বাসরোধ করে ও ঘাড় মটকাইয়ে হত্যা করে মেঝেতে ফেলে রাখে পালিয়ে যায় তারা।
পিবিআই রংপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার জানান, ভিকটিম (বিলকিছ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হওয়ায় মামলাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সুষ্ঠু তদন্তের জন্য টিম গঠন করা হয়। মামলার মূল রহস্য উদ্ধার ও আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আবু হাসান কবির জানান, অনেক খুঁজে মূল হোতা সিদ্দিকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে আদালতে নিজেসহ আরো চারজন জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সিআরপিসি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। এসময় অবশিষ্ট আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর রাতে পীরগঞ্জ থানাধীন বিরামপুর আদিবাসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বিলকিছ আরা বেগমকে (৫২) তার নিজ বাড়িতে খুন করে দুবৃর্ত্তরা।
খুনের ঘটনায় প্রথমে পীরগঞ্জ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়। পরে শিক্ষিকার স্বামী বাদী হয়ে পীরগঞ্জ আমলী আদালতে আরো একটি মামলা করেন। পরে আদালত মামলাটির তদন্তের জন্য রংপুর জেলা পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
এদিকে খুনের মুল হোতা সহ অন্যান্য খুনিদের ধরে সর্বচ্চো শাস্তি মৃত্যুদন্ড কার্যকর করতে এলাকাবাসী, সহকর্মী ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন।